এবার এক ব্যবসায়ীর বাড়িতে শয়নকক্ষের বক্স খাটের ভেতর থেকে বেরিয়ে এলো টিসিবির প্রায় ১৩শ’ লিটার তেল। সরকারী সম্পদ কালোবাজারির অ’ভিযোগে সহযোগীসহ ওই বাড়ির মালিককে গ্রে’ফতার করা হয়েছে।
বুধবার (১৫ এপ্রিল) মধ্যরাতে রংপুর নগরীর সাতগাড়ার একটি বাড়িতে হানা দিয়ে এই বিপুল ভোজ্য তেল উ’দ্ধার করে রংপুর নগর পু’লিশের গো’য়েন্দারা।
সরকারের ন্যায্যমূল্যে বিক্রির এই তেল কালোবাজারে কিনে বেশি দামে বিক্রির উদ্দেশ্যে লুকিয়ে রাখার অ’ভিযোগে ওই বাড়ির মালিক হানিফ মিয়া ও তার সহযোগী লাল মিয়াকে গ্রে’ফতার করতে সক্ষম হন গো’য়েন্দারা।
এর আগে গত এক সপ্তাহে ৬টি অ’ভিযান চালিয়ে আরও ১৫ হাজার লিটার তেল ও ৫ হাজার কেজি চিনি উ’দ্ধার করেন গো’য়েন্দারা।
টানা অ’ভিযানে নেতৃত্বদানকারী অতিরিক্ত পু’লিশ কমিশনার (ডিবি) উত্তমপ্রসাদ পাঠক জানান, দেশের এই ক্রান্তিকালে একটি চক্র সরকারের ন্যায্যমূল্যে বিক্রির পণ্য কালোবাজারে কিনে মজুদ করেছে। ফলে একদিকে অ’সহায় মানুষ বঞ্চিত হচ্ছে, আরেক দিকে চড়ামূল্যে বিক্রি করে অধিক লাভ করে অর্থশালী হচ্ছে। কালোবাজারীদের বি’রুদ্ধে অ’ভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানান তিনি।
আরো সংবাদ
মহাকাশে ৩০০০ কোটি টাকার স্যাটেলাইট আছে, কিন্তু চিকিৎসকদের বাঁচানোর জন্য কোন সরঞ্জাম নেই কেন?
মহাকাশে ৩০০০ কোটি টাকার স্যাটেলাইট আছে, কিন্তু চিকিৎসকদের বাঁচানোর জন্য কোন সরঞ্জাম নেই কেন?
ডক্টর তুহিন মালিক
আপনাদের মনে আছে, রানা প্লাজায় আ’টকে থাকা গার্মেন্টস শ্রমিকদের উ’দ্ধারের জন্য বাসাবাড়ি ও দোকান থেকে রড কা’টার যন্ত্র চেয়ে সাহায্য করতে সেদিন জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলো উ’দ্ধারকর্মীরা। হায়রে দেশ! রাষ্ট্রের কাছে সামান্য কয়েক হাজার স্কয়ার ফিট ভবনের রড কা’টার যন্ত্র পর্যন্ত নেই!
রাজধানীর শাহজাহানপুরে রেলওয়ে পাম্পের পরিত্যক্ত পানির পাইপে পড়ে যায় ৪ বছরের শি’শু জিহাদ। জিহাদকে উ’দ্ধার করতে না পারলেও সেদিন তার শো’কার্ত বাবাকে পু’লিশ ধরে নিয়ে গিয়ে ১২ ঘন্টা আ’টকে রেখে নি’র্যাতন করে। সেদিন সরকার পাইপের ভেতর ক্যামেরা পাঠিয়ে টিকটিকি পেয়েছিল। অথচ কোন মানুষ পায়নি। অথচ তখন সাধারণ মানুষই এসে বাচ্চাটির লা’শ উ’দ্ধার করে। হায়রে দেশ! রাষ্ট্রের কাছে কয়েক ফিট পাইপের নীচে আ’টকে পড়া শি’শুকে উ’দ্ধারের কোন ব্যবস্থা নেই! ওয়াসার খোলা পাইপ ঢেকে রাখার জন্য কোন ঢাকনা নেই!
বনানী এফ আর টাওয়ারে যখন আ’গুন লাগে। তখন গোটা জাতি অবাক বিস্মিত হতে নিজেদেরকে নিঃস্ব আর অ’সহায় দেখে। যখন দেখে ২২ তলা ভবন পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে এমন একটা মই (ল্যাডার) আমাদের নেই!
এই রাষ্ট্র কোন কিছুরই দায় নেয় না৷ স্যাটেলাইট, আতশবাজি আর চা’পাবাজিতে আলোকিত এই রাষ্ট্র সাধারণ মানুষের জীবনের অতি সাধারণ সুবিধা বা সেবাটুকু দিতেও আজ আর সক্ষম নয়। সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোও জানে যে, কয়েক দিনের মধ্যেই সবাই এগুলো ভুলে যাবে। অর্থাৎ পরবর্তী বিপদ হবার আগে পর্যন্ত। রাষ্ট্র জানে, গণভবন নামক এক ম্যাজিকাল ‘সান্ত্বনা ভবন’ রয়েছে আমাদের। যেখানে রাষ্ট্রের সব অবহেলা আর অক্ষমতায় পরিনত হওয়া লা’শগুলোর পরিবারের জন্য বরাদ্দ রয়েছে সান্ত্বনা! আর অভাগা জাতি জানেই না যে, এগুলো রাষ্ট্রের অবহেলা বা অক্ষমতাজনিত কোন মৃ’ত্যু নয়। এটা একেকটা সুস্পষ্ট রাষ্ট্রীয় হ’ত্যাকাণ্ড।
যে রাষ্ট্র মহাকাশে ৩০০০ কোটি টাকার স্যাটেলাইট পাঠাতে পারলেও একজন চিকিৎসকের জীবন বাঁচাতে একটা আইসিইউ এম্বুলেন্স দিতে পারে না! একজন নাগরিকের জীবন বাঁচানোর জন্য আইসিইউ এম্বুলেন্স পেতে তাকে কতবড় ভিআইপি হতে হবে?
রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী-এমপি কিংবা দলের সাধারন সম্পাদক ছাড়া আর কোন কোন ক্যাটাগরিতে দেশের একজন নাগরিক তার জীবন বাঁচানোর জন্য ‘উন্নত’ ও ‘দ্রুতগতির’ চিকিৎসা সরঞ্জাম পাবেন? যে রাষ্ট্র দেশের মানুষের জীবন বাঁচানোর কাজে দায়িত্বরত একজন চিকিৎসককে পর্যন্ত সুরক্ষা সরঞ্জাম দিতে পারে না! সেই রাষ্ট্র পারে শুধু ‘গণভবনের সান্ত্বনা’ আর লা’শের বিনিময়ে নগদ কিছু অর্থ সাহায্য ও এতিমের পরিবারের জন্য একগুচ্ছ সমবেদনা দিতে! এ যেন ‘গরু মে’রে জুতা দান, আর মানুষ মে’রে সান্ত্বনা দান’ এর মতই!